বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আর নতুন কর্মসংস্থানের জন্য চট্টগ্রামে প্লাস্টিক সার্কুলারিটি প্রজেক্ট উদ্বোধন
September 16, 2025
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) যৌথ উদ্যোগে আজ চট্টগ্রামে উদ্বোধন হলো প্লাস্টিক সার্কুলারিটি প্রজেক্ট। এই প্রকল্পের লক্ষ্য প্লাস্টিক বর্জ্যকে পরিবেশের জন্য ঝুঁকি থেকে সম্পদে পরিণত করা, যা কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দূষণ কমানো এবং প্রতিবেশ রক্ষায় সহায়তা করবে।
বাংলাদেশে প্রতিবছর ৮ লাখ টনেরও বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয়, যার বড় অংশ নদী ও সাগরে গিয়ে মিশে পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি তৈরি করে। বিশেষ করে চট্টগ্রামে প্রচুর প্লাস্টিক বর্জ্য কর্ণফুলি নদী হয়ে বঙ্গোপসাগরে পৌঁছায়।
২০২৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এই প্রকল্প, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও টাঙ্গাইলে বাস্তবায়ন করা হবে। এর মাধ্যমে ১৫ হাজার টন প্লাস্টিক সংগ্রহ ও পুনর্ব্যবহার করার পাশাপাশি ২ হাজার বর্জ্যকর্মী, যার মধ্যে ৬০০ নারীকে নিরাপদ কর্মসংস্থান, দক্ষতা উন্নয়ন এবং উন্নত জীবিকা প্রদানে সহায়তা করা হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন,
“প্রতিদিন আমাদের শহরে প্রায় ৩ হাজার টন বর্জ্য সংগ্রহ হয়, যার বড় অংশই প্লাস্টিক। এই প্লাস্টিক কর্ণফুলি নদী ও বঙ্গোপসাগরে গিয়ে জমা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা চ্যালেঞ্জকে সুযোগে পরিণত করার সুযোগ পাব, পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষা এবং বিশেষ করে নারীদের জন্য নিরাপদ ও উন্নত কর্মসংস্থানের পথ তৈরি করবে বলে আশা করছি ।”
ইউএনডিপি বাংলাদেশ-এর সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি সরদার এম. আসাদুজ্জামান বলেন, “প্লাস্টিককে আর বর্জ্য হিসেবে দেখা যাবে না, বরং এটি মূল্যবান সম্পদ। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা ১৫ হাজার টন প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার করব এবং ২ হাজার কর্মীকে দক্ষতা, নিরাপদ পরিবেশ ও নতুন সুযোগ দিয়ে সহায়তা করব। সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য অংশীদারদের সাথে একসাথে আমরা এক পরিষ্কার ও সবুজ চট্টগ্রাম গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সিইও (ইন-চার্জ) ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন বলেন, “এই প্রকল্প শুধু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নয়, এটি একটি সার্কুলার অর্থনীতি গঠনের প্রচেষ্টা। রিসাইক্লিং ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ, স্থানীয় উদ্যোগকে সহায়তা এবং নাগরিকদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত করছি প্লাস্টিক যেন দূষণ নয়, সম্পদ হিসেবে অর্থনীতিতে ফিরে আসে।”
অনুষ্ঠানে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, নারী অধিকারকর্মী, শিক্ষাবিদ, বর্জ্যকর্মী সংগঠন এবং উন্নয়ন সহযোগীরা অংশ নেন। আলোচনায় উঠে আসে, প্লাস্টিক সার্কুলারিটি অগ্রসর করতে হলে স্থানীয় অংশীদারিত্ব, জেন্ডার-সংবেদনশীল নীতি এবং সবুজ উদ্যোগে বিনিয়োগ।
দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন-এর সহায়তায় ইউএনডিপি এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন টেকসই সমাধান এগিয়ে নিতে, প্রতিবেশ রক্ষা করতে, নারীর ক্ষমতায়ন ও সবুজ ভবিষ্যৎ গড়তে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।