প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে লক্ষ্যে অবিচল—কাওছার আক্তার তাহিনের ডিজিটাল ক্ষমতায়নের গল্প
August 21, 2025
চট্টগ্রামের এক নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া কাওছার আক্তার তাহিনের গল্পটা শুধু অর্থনৈতিক সংকটের নয়। খুব ছোটবেলায় টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে ডান পায়ের কর্মক্ষমতা হারান তিনি। তার এই প্রতিবন্ধকতাকে যখন অনেকে সীমাবদ্ধতা হিসেবে দেখছিল, কাওছার তখন একেই পরিণত করেন তার সবচেয়ে বড় শক্তিতে।
আশেপাশের মানুষের কটু কথা সত্ত্বেও কাওছারের বাবা-মা তার নিয়মিত স্কুলে যাওয়া নিশ্চিত করেন। এসএসসি পাশ করার পরে তার বাবা তাকে একটা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি করে দেন। আর এটিই তার জীবন পরিবর্তন করে দেয়। ২০১৩ সালে কাওছার ৩৪ নং ওয়ার্ড নগর ডিজিটাল সেন্টারে যোগ দেন। পরবর্তীতে এখান থেকেই ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত এটুআই প্রজেক্টের অধীনে তিনি উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
নিজের জ্ঞান, ইচ্ছাশক্তি আর দৃঢ়তার বলে খুব শীঘ্রই কাওছার তার নিজের ডিজিটাল সেবার ব্যবসা শুরু করেন। আজ তিনি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা উপার্জন করেন। নিজের সমাজে তিনি এখন হয়ে উঠেছেন ক্ষমতায়নের এক দৃষ্টান্ত। তবে কাওছার শুধু নিজের সফলতাতেই থেমে থাকেননি, তিনি অন্যদেরও সাহায্য করেছেন।
তিনি নিজের বোনকে চাকরি দিয়েছেন, অন্য আরও পাঁচ-ছয়জনের চাকরির সুযোগ তৈরি করেছেন। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের সেরা ৩০০ উদ্যোক্তার মধ্যে একজন ছিলেন কাওছার। চট্টগ্রামের অনেকের কাছে তিনি এখন সাহস ও সম্ভাবনার প্রতীক।
কাওছার বলেন, ‘আমার উদ্যোক্তা হওয়ার পথে অনেক বাধা ছিল। কিন্তু আমি থামিনি। কারণ আমার জেদ ছিল, আমাকে ভালো কিছু করতেই হবে।’
আশেপাশের মানুষের নেতিবাচক কথা ছাপিয়ে ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী একজন হয়ে ওঠা—কাওছারের গল্প আজ অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও লিঙ্গ সমতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ।