দেয়ালে আঁকা ন্যায়বিচার: হরিপুরের তরুণদের কণ্ঠে গ্রাম আদালতের বার্তা

August 28, 2025
Silhouettes of five people against a blue background with a bird and text.
©UNDP Bangladesh

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার শান্ত গ্রামীণ জনপদে ৩০ জন উদ্যমী তরুণ-তরুণী তুলির আঁচড় আর জোরালো স্লোগানের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলছেন। মো. শাকিল খানের নেতৃত্বে ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদের ১৭ জন নারী ও ১৩ জন পুরুষ স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে গঠিত হয়েছে হরিপুর উপজেলা ইয়ুথ ফোরাম। এই ফোরামের অধিকাংশ সদস্যই শিক্ষার্থী। তবে পাঠ্যপুস্তকের বাইরেও তারা শিখছেন এবং শেখাচ্ছেন ন্যায়বিচার-এর মতো শক্তিশালী একটি ধারণা।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে হরিপুরে অ্যাক্টিভেটিং ভিলেজ কোর্টস্ ইন বাংলাদেশ (ফেইজ থ্রি) প্রকল্প শুরু হলে এই তরুণরা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে মানুষের মাঝে গ্রাম আদালত নামে প্রায় এক উপেক্ষিত আইনি মাধ্যমের প্রচারণা শুরু করেন। কমিউনিটি এঙ্গেজমেন্ট সেশন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তারা গ্রাম আদালতের এমন এক প্রচারণা কৌশল বেছে নেন, যা সবাই সহজে দেখতে ও বুঝতে পারবেন।

রং-তুলি আর সৎ একটি উদ্দেশ্য নিয়ে তারা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ও ব্যস্ত হাটবাজারের দেয়ালে গ্রাম আদালত সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির জন্য স্লোগান লিখতে শুরু করেন। কোনো তহবিল বা পুরস্কার নেই, শুধু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় মানুষের স্বীকৃতি আর আন্তরিক প্রশংসাই ছিল তাদের প্রাপ্তি। এই সৃজনশীল ও স্বল্পব্যয়ের প্রচারণা কৌশলটি ইতোমধ্যে তিনটি ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ক্রমশ বিস্তৃত হচ্ছে।

আর এর ফলাফল? আরও বেশি মানুষ, বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সদস্যরা এখন তাদের স্থানীয় পর্যায়েই ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার সম্পর্কে জানছেন। গ্রাম আদালতে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর ও তথ্য জানতে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা বেড়েছে আর তরুণদের আত্মবিশ্বাসও হয়েছে আরও দৃঢ়।

শাকিল খান বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, স্থানীয় পর্যায়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা প্রতিটি সচেতন নাগরিকের দায়িত্ব। আমরা চাই, সচেতনতা ও নিয়মিত কার্যক্রমের মাধ্যমে গ্রাম আদালতের সেবা পৌঁছে যাক আমাদের সমাজের প্রতিটি প্রান্তে।’

রঙের কৌটা থেকে জনসেবা, হরিপুর উপজেলা ইয়ুথ ফোরাম দেখিয়ে দিয়েছে, স্থানীয় উদ্যোগও জাতীয় পরিবর্তনের চালিকাশক্তি হতে পারে।