জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত

October 11, 2025
Speaker at podium with microphones, blue conference backdrop, seated panelists.

মানবাধিকার রক্ষা ও সুশাসন জোরদারের লক্ষ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া নিয়ে আজ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় পরামর্শ সভা।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ ও ইউএনডিপি যৌথ ভাবে, সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের সহায়তায় ‘স্ট্রেংদেনিং ইনস্টিটিউশনস, পলিসিস অ্যান্ড সার্ভিসেস (SIPS)’ প্রকল্পের আওতায় এ পরামর্শের আয়োজন করে।

সভায় মানবাধিকার কর্মী, সুশীল সমাজ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, আইনজীবী ও সরকারি কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীরা একটি স্বাধীন, কার্যকর ও বিশ্বাসযোগ্য এনএইচআরসি গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন, যা প্যারিস নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী। বক্তারা বলেন, এই সংস্কার প্রক্রিয়া মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত খুলে দেবে এবং নাগরিকদের আস্থা পুনঃস্থাপন করবে।

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল তার বক্তব্যে বলেন “আইনি স্বচ্ছতা ও জনগণের আস্থা একটি শক্তিশালী মানবাধিকার কমিশনের ভিত্তি। এই সংস্কার প্রক্রিয়া একটি জবাবদিহিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠান গঠনের সুযোগ তৈরি করেছে।”

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “এটি এমন একটি মানবাধিকার কমিশন গঠনের সুযোগ, যা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, সক্ষম এবং পরিবেশসহ প্রতিটি নাগরিকের অধিকার সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।”

গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান তার বক্তব্যে বলেন, “মানবাধিকার সুরক্ষায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা অত্যন্ত জরুরি। নির্বাচনের আগে কমিশন পুনর্গঠন করা হলে নাগরিকদের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”

ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, “সরকার, নাগরিক সমাজ ও উন্নয়ন সহযোগীদের এই যৌথ উদ্যোগ বাংলাদেশে মানবাধিকার অগ্রযাত্রায় একটি নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে। ইউএনডিপি এই সহযোগিতাকে দীর্ঘমেয়াদে আরও শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

এছাড়াও সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলি বলেন “সুইজারল্যান্ড সবসময় এমন একটি স্বাধীন ও বিশ্বাসযোগ্য মানবাধিকার কমিশনকে সমর্থন করে, যা রাষ্ট্র ও নাগরিকদের মধ্যে আস্থা তৈরি করে এবং সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে।”

এই জাতীয় পরামর্শটি সিলেট, খুলনা, কক্সবাজার, রাজশাহী ও রংপুরে অনুষ্ঠিত পাঁচটি আঞ্চলিক পরামর্শের পর চূড়ান্ত ধাপ হিসেবে আয়োজিত হয়। সারাদেশে ৫০০-রও বেশি মানবাধিকার কর্মী , নারী ও সংখ্যালঘু সংগঠন, যুব প্রতিনিধি এবং সাংবাদিক এতে অংশগ্রহণ করেন।

ইউএনডিপির SIPS প্রকল্প ও সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের সহ-অর্থায়নে পরিচালিত এই উদ্যোগটি বাংলাদেশের মানবাধিকার, সুশাসন ও প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতা জোরদারে সরকারের চলমান প্রচেষ্টার অংশ।