সবার জন্য ন্যয়বিচার নিশ্চিকরণে সারাদেশে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম সম্প্রসারিত হচ্ছে

August 20, 2023

সাধারণ গ্রামীণ জনগণকে ন্যয়বিচার পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টিতে ভিলেজ কোর্ট তথা গ্রাম আদালত ব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকরি প্রমাণিত হওয়ায় বাংলাদেশ সরকার, ইউএনডিপি’র সহায়তায় বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির এই ব্যবস্থাটি সারা দেশে সম্প্রসারণের ব্যবস্থা নিয়েছে। এতে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। গ্রাম আদালতের কার্যক্রম দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে আজ (২০ আগস্ট)  অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে গ্রাম আদালত প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায় বাস্তবায়নের চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করেন শরিফা খান, সচিব, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, ডাঃ মোঃ সারোয়ার বারী, মহাপরিচালক, পরিকল্পনা, পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও পরিদর্শন, অনুবিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ  এবং ইউএনডিপির পক্ষ থেকে স্টেফান লিলার আবাসিক প্রতিনিধি, ইউএনডিপি বাংলাদেশ ।

প্রায় ৩৮ লাখ মামলাজটের কারণে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বিদ্যমান আদালতের প্রতিকার পাওয়া দূরূহই বটে! প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে তাই প্রায়শই সালিশের জন্য অন্যের দ্বারস্থ হতে হয় যা আবার বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই স্থানীয় প্রভাবশালীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত;  ফলে নারী ও সংখ্যালঘুদের সুবিচার প্রাপ্তির আশা অনেকাংশেই অধরাই থেকে যায়। এই সমস্যার সমাধানকল্পেই স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ইউএনডিপি মিলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগীতায় গ্রামীন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারী, ক্ষুদ্র জাতিস্বত্তা ও প্রান্তিক জনগোষ্টীর সুবিচার প্রাপ্তিতে কাজ করছে এক্টিভেটিং ভিলেজ কোর্টস অব বাংলাদেশ তথা গ্রাম আদালত প্রকল্প।

দ্বিতীয় পর্যায়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের নেতৃত্বে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে ৪৪৫৭ টি ইউনিয়নে। পার্বত্য এলাকা ছাড়া পুরো বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদ এই প্রকল্পটির সুফল পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। অংশীজনের দক্ষতা বৃদ্ধি, নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ, সামাজিক উদ্যোগ বেগবান করাসহ যথাযথ পরীবিক্ষনের মাধ্যমে সুবিচার নিশ্চিতকরণের প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরীতে কাজ করবে প্রকল্পটি । 

উল্লেখ্য যে স্থানীয় সরকারের সর্বোনিম্নস্থ  কাঠামো ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিকল্প বিরোধ পদ্ধতির মাধ্যমে ছোটখাট বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য গ্রাম আদালত অর্ডিনেন্স ১৯৭৬ এর বিধানের আলোকে গ্রাম আদালত প্রতিষ্ঠিত হয় । আইনের বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালিত না হওয়ায় ২০০৯ সালে গ্রাম আদালত পূর্ণজ্জীবিতকরণ প্রকল্প, একটি পাইলট  প্রজেক্ট হিসেবে ২০০৯ সালে যাত্রা শুরূ করে । বিকল্প বিরোধ নিষ্পতিতে সাফল্যের কারণে প্রকল্পটি বিভিন্ন সময়ে সম্প্রসারিত করা হয়। ২০১৬ সালে দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকল্পটি যাত্রা শুরূ করে গ্রাম আদালতের কার্যক্রমকে অনেকদুর এগিয়ে নিয়ে যায়্। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সাল থেকে পার্বত্য এলাকা বাদে পুরো বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদে ইউনিয়ন পরিষদকে কেন্দ্র করে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরূ হয়েছে ।